মো আসাদুজ্জামান আসাদ
একসময় নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক বস্তু হিসেবে মাটি দিয়ে তৈরি কারুকার্য ও বিভিন্ন রকমের বাহারি নকশা, করা থালা, বাসন, হাড়ি, পাতিল, ঘটি, বাটি, খেলনা ইত্যাদি ব্যবহার করলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিপন্ন হতে বসেছে মুন্সীগঞ্জের আব্দুল্লাহ্ পুর ইউনিয়ন কুমারী বাড়ির ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
মুন্সীগঞ্জের কুমারী বাড়ির হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান পেশা ছিল এই মৃৎশিল্প। বর্তমানে আধুনিক যুগের প্লাস্টিক সামগ্রীসহ অন্যান্য জিনিস পত্রের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় এই শিল্পে ধস নেমেছে।
সেই সাথে মৃৎশিল্পে জড়িত কুমারী বাড়ির পরিবার গুলোও আর্থিক সংকটসহ নানা অভাব অনটনে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মৃৎশিল্প থেকে। মৃৎশিল্পীদের আজ বড়ই দুর্দিন। অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত কুমার বাড়ির পরিবার গুলো। যদিও এর উপর নির্ভর করে তিনবেলা ডাল-ভাত জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের, তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে কঠোর পরিশ্রম করে পরিবার গুলো এখনও বাপ-দাদার এ পেশাকে আঁকরে ধরে আছেন।
মাটি দিয়ে তৈরি করা হাঁড়ি পাতিলের কারুকার্য ও বিভিন্ন রকমের বাহারি নকশা, মানুষের পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে গেছে মৃৎ শিল্পের ঐতিহ্য গুলো সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে মুন্সীগঞ্জের কুমারী বাড়ির ২০০ বছরের মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য । আধুনিকতার ছোয়ায় মানুষের পরিবর্তন এসেছে।ফলে এই মৃৎশিল্প থেকে মুখ ফিরেয়ে নিচ্ছে ক্রেতারা। এরফলে মৃৎশিল্পের কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন কুমার বাড়ির কারিগররা ।
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ্পুর ১নং ওয়ার্ড কুমারী বাড়ি ঐতিহ্যবাহী হিন্দু সম্প্রদায়ের অঞ্জলি রানি পাল, মধু পাল, ভেঙ্গুপাল সহ কয়েকজন বলেন, আমাদের উপকরণ গুলো হলো মাটি।
২০০ বছর ধরে এ মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেন আমাদের পূর্বপুরুষেরা।
এই কাজ করতে অনেক শ্রম ও শরীরের প্রচুর শক্তি দরকার এবং কোমরেও জোর থাকতে হয়। এই কাজ করতে করতে আমার কোমর অচল হয়ে গেছে, তাই আর আগের মতো কাজ করতে পারি না। আমাদের নেই কোন আধুনিক মেশিন ও সরঞ্জাম। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য কাজের দিকে চলে যাচ্ছে। তবে সরকারি বা কোনও দাতা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে চান এখানকার মৃৎশিল্পীরা।

